অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার উপায়– দৈনন্দিক এমন অনেককেই দেখা যায় যাদের বয়স কুড়ি হওয়ার আগেই বুড়ি হয়ে যায়। অর্থাৎ অল্প বয়সেই চুল পেকে যাচ্ছে। অল্প বয়সে চুল পাকলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিভিন্ন কারণে অল্প বয়সে চুল পাকা শুরু হয়। খাদ্যাভ্যাস এর কারণে যেমন অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত, ভিটামিন বি টুয়েল্ভ, ফোলেট, ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার না থাকায় চুলে পুষ্টি সরবরাহ কমে চুল পড়া ও চুল পাকা শুরু হয়। এছাড়াও দূষিত আবহাওয়া, ধুলা-বালির প্রভাবেও চুল পাকা শুরু হতে পারে। আবার বংশগত কারনেও চুল পাকা শুরু হয়। তাছাড়াও হরমোন জনিত কারনেও অল্প বয়সে চুল পাকে। মানসিক চাপ, ধুমপান, বিভিন্ন প্রকার ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে চুল পাকা শুরু হতে পারে। অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার উপায়।
অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার উপায়
যাদের অল্প বয়সে চুল পেকে গেছে তারা জন সভায় যোগ দিতে অস্তিতে ভুগে। এমনকি নিজেদের পারিবারিক অনুষ্ঠানেও যোগ দেওয়ার আগ্রহ নষ্ট হয়ে যায়। মাথা ভর্তি চুল থাকলেও সেই চুলগুলো সাদা বা পাকা হওয়ায় চিন্তার শেষ থাকে না। তাই অনেকেই এই সাদা চুল কালো করার জন্য কালো মেহেদি সহ বিভিন্ন প্রকার কৃত্রিম রং ব্যবহার করে। আবার অনেকেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল কালো করার চেষ্টা করে।
কৃত্রিমভাবে চুল কালার একটি সাময়িক সমাধান। কৃত্রিমভাবে চুল কালার করলে কিছুদিন পর চুল বৃদ্ধি পাওয়ায় চুলের গোড়ার সাদা অংশ দেখা যায়। যাদের শরীরে এলার্জি আছে তারা যদি চুল কৃত্রিমভাবে কালার করে তবে তাদের মাথা ত্বক ফুলে যায় এমনকি ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় চুল পড়াও শুরু হয়। তাই আসুন কৃত্রিমভাবে চুল কালার না করে প্রাকৃতিকভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল পাকা প্রতিরোধ করি।
অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার উপায়-
ভিটামিন এ জাতীয় খাবার-
ভিটামিন এ চুল পাকা রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিন ভিটামিন এ জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন। দুধ, কড লিভার ওয়েল, মাখন, ঘি, গরুর কলিজা, মাংস, গাজর, ডিম, ছোট মাছ, টমেটো, কুমড়া, লেটুস পাকা, জাম্বুরা, আম ও সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ রয়েছে। তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় এই খাবারগুলো রাখুন।
আয়রন এ যুক্ত খাবার-
আয়রন চুলের বৃত মজবুত রাখে এবং চুল কালো রাখে। আয়রনের অভাবে রক্ত সল্পতা দেখা দেয়। যার ফলে রক্তের গতি কমে যায় এবং মাথার ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহের পরিমান কমে যায়। ফলে চুল পুষ্টহীনতা ভোগে এবং চুল পাকতে শুরু করে। এ জন্য প্রতিদিন আয়রন যুক্ত খাবার খান। ডিমের কুসুম, গুরুর মাংস, মুরগির মাংস, পালংশাক, কচুশাক, শিমের বিচি, মসুর ডাল ও কাজু বাদাম আয়রণ সমৃদ্ধ খাবার। অল্প বয়সে চুল পাকা প্রতিরোধ করতে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় উক্ত খাবারগুলো যোক্ত করুন।
ভিটামিন সি যুক্ত খাবার–
রোগ প্রতিরোধ কমে গেলে অল্প বয়সে চুল পাকা শুরু হয়। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খান। কাঁচা মরিচ, লেবু, সবুজ শাক, ব্রুকুলি, পেয়ারা, ক্যাপসিকাম, কাঁচা পাকা পেপে, কমলা ও আমলকিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি রয়েছে।
বিষয়: অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার উপায়
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত-
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার চুলে পুষ্টির যোগান দেয়। তাই খাবার তালিকায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার রাখুন। মৌসুমী ফল ও সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। তাছাড়া গ্রিন টি, আঙ্গুর, বাদামের তেল, ভুট্টা, জলপাই, ব্রোকলি, আনারস উদ্ভিজ তেলেও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে।
নিয়মিত চুল চিড়নি করা-
নিয়মিত চুল চিড়নি করলে চুলের রক্ত সরবরাহ বেড়ে যায়। রক্ত সরবরাহ বেড়ে গেলে চুল প্রয়োজনমত পুষ্টি পায় চুল কালো হতে শুরু করে।
অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করার উপায়
নারিকেল তেল-
জলে চুন তাজা আর তেলে চুল তাজা। তাই চুল তাজা রাখতে হলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন চুলে নারিকেল তেল ব্যবহার করুন। নারিকেল তেল এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে ভাল উপকার পাওয়া যাবে।
মেহেদী পাতা–
মেহেদী পাতা চুলকে কালার করে। মাতা ঠান্ডা রাখে। মাসে অন্তত এক বার মেহেদী পাতা ব্যবহার করলে অল্প বয়সে চুল পাকা কমে যাবে।
আদা ও মধু-
মধু অনেক রোগের প্রতিশেধক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। আদার রস ও মধুর মিশ্রন তৈরী করে নিয়মিত খেলে অল্প বয়সে চুল পাকা কমে যাবে। পেঁয়াজবাটা: পেয়াজে থাকা ফসফরাস মাতার রক্ত সনঞ্চলন বৃদ্ধি করে। তাই অসময়ে চুল পাকা প্রতিরোধ করতে প্রতিদিন গোসলের আগে চুলের গুড়ায় পেঁয়াজবাটা ব্যবহার করুন।